সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সত্য এসেছে মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে


সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ সুবাহানওয়া তাআ’লার । যিনি এক ও অদ্বীতিয় এবং সমস্ত জাহানের মালিক ও একচ্ছিত্র ক্ষমতার অধিকারী ।
তিনি মহান আল্লাহ তাআ’লা যিনি মানুষ ও জ্বীন জাতিকে সৃষ্টি করেছেন কেবল তাঁর ইবাদাত করার জন্য । কিন্তু মানুষ জাতি যখনই তার সৃষ্টিকর্তার এই মহান উদ্দেশ্য ভুলে যেতে শুরু করে, ঠিক তখনই একজন হিদায়াত প্রাপ্ত নবী/রাসূলের আঘমন ঘটে । আর এই ধারাবাহিকতা হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর মাধ্যমে শেষ হয় । তাদের প্রত্যেকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিলো এক ও অভিন্ন । আর তা হলো- একমাত্র মহান রব এর সন্তুষ্টি অর্জন ।

আমাদের রাসূল মুহাম্মদ (সা.) যখন জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তখন পৃথিবীতে চলছিল- জুলুম-অত্যাচার, অশ্লীলতা-বর্বরতা, হত্যা- আহজারির এক জাহেলী পরিবেশ । এর মধ্যেই আবির্ভাব হন সত্যের এক জ্যোতির্ময় । যিনি সেই আরবের কুসংস্কারকে সংস্কার করে জ্বালিয়ে দেন সত্যের আলোকবর্তিকা । আর সেই আলো ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে সমস্ত ধরণীতে । সৃষ্টি হয় এক আল্লাহর ইবাদতের রাজত্ব । বিলুপ্ত হয় বহু মিথ্যা প্রভুর ইবাদাত ।
আসুন দেখি রাসূল (সা.) এর আবির্ভাব এর পূর্বমূর্তেহ প্রচলিত কিছু জাহেলী আচরণঃ
১. কাবার মধ্যে ‘হুবাল’ নামক মূর্তি স্হাপন,
২. মূর্তিদের জন্য বিভিন্ন প্রকার মানত ও কুরবানী উৎস্বর্গ করা হতো,
৩. তথাকথিত ভবিষ্যদ্বক্তা, যাদুকর এবং জ্যোতিষদের উপর বিশ্বাস স্হাপন করতো,
৪. ‘বিয়ের’ নামে কিছু জগণ্য প্রথার প্রচলন ছিলো (যেখানে একজন নারীর সাথে ১০ জন পুরুষের মিলনও ছিলো বৈধ),
৫. অভাব, অনটনের ভয়ে সন্তানদের হত্যা করতে কুণ্ঠা বোধ করতেন না (বিশেষ করে মেয়ে সন্তানদের),
৬. জাতীয়তাবাদের চর্চা বেশি হতো (যেমন তারা বলতো- নিজ ভাইকে সাহায্য কর সে অত্যাচারী হোক কিংবা অত্যাচারিত হোক),
এরকম বহু শিরক, কুসংস্কার, অশ্লীলতা ও বর্বরতায় ভরপুর ছিলো তৎকালীন সমাজ ব্যবস্হা । কিন্তু আল্লাহ সুবাহানওয়া তাআ’লার বিশেষ দয়ায় রাসূল (সা.) তাদেরকে সেই জাহেলিয়াতের দিক হতে সত্য ও সুন্দর ধর্ম ইসলাম’ এর দিকে দাওয়াত দেন । আর সেই দাওয়াত থেকে ‘এক+এক= দুই’ করে বৃদ্ধি পেতে থাকে বিশ্বাসীদের সংখ্যা । তবে এর পেছনে রয়েছে রাসূল মুহাম্মদ (সা.) থেক শুরু করে শত শত সাহাবীদের রক্ত ঝরা । তবুও তাঁরা ক্ষান্ত ছিলেন না দ্বীন প্রচারে ও দ্বীন কায়েম । (আল্লাহ তাদেরকে শান্তিতে রাখুন)
তবে আজকে আমরা কতটুকু সত্যের পথে আছি ? কতটুকু সত্যের অনুসন্ধান করছি ? -তা যাচাই করতে আমার নিজের/ পরিবারের/ সমাজের/ রাষ্ট্রের দিকে তাকালেই সহজে বুঝতে পারি । কারণ আমাদের অনেকেই আজ দ্বীন আল ইসলাম কে ফুলদানিতে সাজিয়ে রাখা ফুলের মতো বৃদ্ধকালের জন্য রেখে দেই । অথচ আমার সহপাঠী/ ভাই/ ছেলে, আমার সামনে প্রতিনিয়তই মারা যাচ্ছে । তাহলে কি আমরা মৃত্যুকে ভয় করি না? যার পর অপেক্ষ করছে অনন্তকালের জীবন ।
এছাড়া আমরা পশ্চাত্যের বিজাতীয় সংস্কৃতি, অভ্যাস, আচরণ ও জীবন ব্যবস্হার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ছি । আমরা ভাবছি এ যেন বহু অপেক্ষিত পাওয়া । অথচ এ যেন আমাদের সত্যকে ছেড়ে মিথ্যাকে, আলোকে ছেড়ে অন্ধকারকে আলিঙ্গন করা । আমরা আজ ভুলে গেছি সেই রাসূল (সা.) এর ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় সংস্কার । আমরা আরো ভুলে যাচ্ছি মহান আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত বানী, যা বলে রাসূল (সা.) মক্কার ভিতর থেকে মূর্তিকে বের করে দিয়েছিলে । যার মাধ্যমে মিথ্যা প্রভু (মূর্তি) কে নিরসন করেছিলেন । যার মাধ্যমে এক আল্লাহর ইবাদাতকে সত্য হিসেবে মেনে নেওয়ার পথ দেখিয়েছেন ।
মহান আল্লাহ বলেন,
‘বলুন সত্য এসেছে মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে । আর মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ার জন্যই ।’ -(বনী ইসরাইলঃ ৮১)
তিনি আরো বলেন,
‘নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম’ -(সূরা আল ইমরানঃ ১৯)
সুতরাং সত্য ধর্ম ইসলাম মেনে নেওয়ার মধ্যেই চুড়ান্ত সফলতা ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

পাহাড়ের গুহায় আটকে পড়া তিন যুবকের গল্প

আবদুল্লার  ইবনে উমার  (রা.) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি : তোমাদের পূর্বকালের তিনজন লোক কোথাও চলার পথে রাত কাটাবার উদ্দেশে এক পর্বত গুহায় আশ্রয় নিল। তারা সেখানে প্রবেশ করার পর একখানা পাথর খসে পড়ে তাঁদের গুহার মুখে বন্ধ করে দেয়।

এক মুসলমানের উপর আরেক মুসলমানের ছয়টি সুনির্দিষ্ট হক রয়েছে

হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূল (সা.)   বলেন,   এক মুসলমানের উপর  আরেক মুসলমানের ছয়টি হক রয়েছে- 1. তুমি যখন সাক্ষাৎ করবে, তখন সালাম দিবে। 2.সে যখন তোমাকে দাওয়াত দিবে, তখন গ্রহণ করবে। 3.সে যখন তোমার কাছে পরামর্শ চাইবে, তখন পরামর্শ প্রদান করবে।

কিছু সুবর্ণ সুযোগ : আমরা সহজেই কাজে লাগাতে পারি

TA প্রশংসা আল্লাহ্ সুবাহানহুয়া তা’আলার। যিন আমাদেরকে ইসলামের মতো শ্রেষ্ঠ নিয়ামাহ্ দিয়ে পরকালীন মুক্তির সুযোগ করে দিয়েছেন। অর্থাৎ আল্লাহর একত্ববাদে নিরেট বিশ্বাস, পবিত্রতার সাথে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, সম্পদের যাকাত, রমাদানের সিয়াম, আর হজ্জের মৌসুমে আল্লাহর ঘর তাওয়াফ আমাদেরকে পরকালীন মুক্তির আশ্বাসই দেয়। তবে আমাদের মানবসুলভ বৈশিষ্টের কারণে আমরা কখনো ছোট থেকে বড় রকমের অনেক অন্যায় করে থাকি, কখনো ভুলে যাই আল্লাহর মনোনীত সরল-সঠিক পথটি, আবার কখনো স্বেচ্ছায় মেনে নেই শয়তানের দাসত্ব। আর এতসব অন্যায় ও ভুলকে দূরে ঠেলে সরল-সঠিক পথটি ফিরে পেতে আল্লাহ্ সুবাহানহুয়া তা’আলা আমাদের জন্য রেখেছেন অসংখ্য সহজ সুযোগ। এছাড়া দুনিয়া ও আখিরাতে একজন বিশ্বাসীর সম্মান-মর্যাদা বাড়িয়ে নিতেও রেখেছেন কিছু সুবর্ণ সুযোগ।  তাই ইসলামের অপরিহার্য বিষয়গুলোর পাশাপাশি এইসব সহজ ও গুরুত্বপূর্ণ সুযোগগুলো সামনে নিয়ে আসার জন্যই এই লিখা। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের উদাহরণ ঠিক প্রবাহিত নদীর ন্যায়, যা তোমাদের...